
ব্লাড ক্যান্সার এর লক্ষন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
15 Apr 2025 By -
ব্লাড ক্যান্সার এর লক্ষন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
ব্লাড ক্যান্সার এর লক্ষন: আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক , আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন । রোগ ব্যাধি মানুষের একটি স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ । আমাদের দৈনন্দিন অস্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া বা চলাফেরার কারণে বিভিন্ন রোগ জীবাণু আমাদের শরীরে বাসা বেধে থাকে । পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যার জীবনে কোন রোগ হয়নি । আমাদের শরীরে নানা রোগ ব্যাধির মধ্যে ব্লাড ক্যান্সার একটি পরিচিত রোগ । ক্যান্সার একটি পরিচিত রোগ হলেও অন্যান্য রোগের থেকে আমরা ক্যান্সার রোগের নাম শুনলে অনেক ভয় পাই এবং অনেক আতঙ্কের মধ্যে থাকে । আজকে আমরা আলোচনা করবো মানুশের শরীরের একটা রোগ ব্লাড ক্যান্সার নিয়ে । ব্লাড ক্যান্সার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো পোষ্ট পড়ুন ।
আজকে আমরা এই পোষ্ট এর মাধ্যমে যা যা জানতে পারব ।
- ব্লাড ক্যান্সার এর লক্ষন ।
- ব্লাড ক্যান্সার এর প্রকারভেদ ।
- ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয় এর জন্য কি কি পরিক্ষা করতে হবে ।
- ব্লাড ক্যান্সার কোন বয়সি মানুষের বেশি হয় ।
ক্যান্সার বলতে আমরা বুঝি মানুষের শরীরের রোগ জীবাণু প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কে নষ্ট করে ফেলা । ব্লাড ক্যান্সার একটি পরিচিত রোগ হলেও এটার কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে । কিন্তু অন্যান্য রোগের মত ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ আগে থেকেই জানতে পারলে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় । ব্লাড ক্যান্সার লোহিত রক্ত কণিকা থেকে হয় ।
ব্লাড ক্যান্সার কোন বয়সি মানুষের বেশি হয়
এই রোগ যেকোনো বয়সই হতে পারে । তবে এটা সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে । ব্লাড ক্যান্সার রক্ত তৈরীর কারখানা বনমেরুতে শুরু হয় । যখন রক্তের কোষগুলো স্বাভাবিক কাজ কর্মের ব্যাঘাত ঘটায় তখন ব্লাড ক্যান্সার হয়।
ব্লাড ক্যান্সার এর প্রকারভেদ
খুব সহজ এবং সাধারণভাবে বলতে গেলে রক্তের ক্যান্সার দুই রকমের হতে পারে ।
১ । এ.এল.এল. (একিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া), এএমএল (একিউট মায়েলোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া), মাল্টিপল মায়েলোমা (অনেক সময় আস্তে আস্তেও হয়) আর কিছু লিম্ফোমা (হজকিন ও নন হজকিন লিম্ফোমা) এগুলা একিউট বা স্বল্প সময়ে খুব দ্রুত জন্ম নেয়া ক্যান্সার যার মধ্যে পরে ।
২ । সিএলএল (ক্রনিক লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া), সিএমএল (ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া) ও কিছু লিম্ফোমা যা ক্রনিক বা লম্বা সময় ধরে ধীরে ধীরে বাড়া ক্যান্সার।
ব্লাড ক্যান্সার এর লক্ষন
- জ্বর
- অধিক দুর্বলতা
- শ্বাসকষ্ট
- চামড়ায় লাল কাল রক্তের দাগ আসা
- মাড়িতে রক্ত পড়া
- গলায়, বগলে, কোমরের কুঁচকিতে গোল হয়ে ফুলে যাওয়া (টিউমার বা ছোট বলের মত)গলায়, বগলে, কোমরের কুঁচকিতে গোল হয়ে ফুলে যাওয়া (টিউমার বা ছোট বলের মত)
- পেট ফোলা
- জন্ডিস
- জয়েন্ট ফোলা আর ব্যাথা (বিশেষ করে বাচ্চাদের)
- শরীর ব্যাথা, হাড় কোমড়ে ব্যাথা
- মাথা ব্যাথা করা
- খসখসে চামড়া ও ফুসকুড়ি
- রাতে ঘামা
- খিদে না পাওয়া ,বমি বমি ভাব
- হঠাত্ অনেক ওজন কমে যাওয়া
- হাড় ও সন্ধিস্থলে ব্যাথা
- বার বার সংক্রমন
- তলপেটে অস্বস্তি
- দাঁতের মাড়ি ফোলা
- অল্প কাটাছিড়া থেকে অনেক রক্ত ক্ষরণ
- বুক ধড়ফড় ও মুক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
এই সব লক্ষন অন্য অনেক রোগের ক্ষেত্রেও দেখা যেতে পারে। তাই অবহেলা না করে কাছের কোন বিশেষজ্ঞগণের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা উচিৎ।
বর্তমানে নানাবিধ রোগ ব্যাধির মতো ক্যান্সারের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে । জরিপে দেখা যায় প্রতি চারজন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মধ্যেও একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী মারা যায় । আবার কোন কোন ক্ষেত্রে আক্রান্তের আশঙ্কা বেড়ে চার জনের জায়গায় তিনজন পর্যন্ত হয়ে থাকে । দিন দিন আক্রান্ত হার পাড়ার কারণ হলো চিকিৎসার অভাব এবং অবহেলার কারণে শরীরের যত্ন নেওয়া , ধুমপান করা রাসায়নিক পদার্থ সূর্যের রশ্মি বাড়তি ওজনসহ আরো অনেক কারণ রয়েছে ।
ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয় এর জন্য রক্তের যে পরীক্ষা করতে হবে ।
- বোন ম্যারো পরীক্ষা
- ট্রিফাইন বায়োপ্সি
- লিম্ফনোড বায়োপ্সি
- ফ্লো সাইটোমেট্রি, ইমিউন হিস্টোকেমিস্ট্রি আর ডিএনএ এনালাইসিস বা সাইটোজেনেটিক্স এসব পরীক্ষা করার দরকার হয়।
এখন আমাদের দেশেই নিয়মিত এই সব পরীক্ষা হচ্ছে। বেশি প্রয়োজন হলে স্যাম্পল বিদেশে পাঠানো যায়। বর্তমানে চট্টগ্রামেই উন্নত বিশ্বের মত সম্পূর্ণ ব্যথামুক্তভাবে এসব পরীক্ষা করা হচ্ছে। এমনকি আপনার উচিত হবে নিয়মিত আপনার ডায়াবেটিস পরীক্ষ করা কারন এটার জন্যও অনেক ধরনের রোগ আপনার হতে পারে।